সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিশ্ব মুসলিমা রিভিউ (বাংলা)

বিবি খাদিজা: ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী

  • মার্গারিটা রডরিগেজ
  • বিবিসি নিউজ মুন্ডো্
  • https://www.bbc.com/bengali/news-55983245

ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী খাদিজা বিন খুওয়াইলিদ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী খাদিজা বিন খুওয়াইলিদ

"বিবি খাদিজা আক্ষরিক অর্থেই তার বিকাশের পথে অদৃশ্য বাধার দেয়াল ভেঙে দিয়েছিলেন। তিনি ১৪০০ বছর আগে যা অর্জন করেছিলেন, তা আজকের দিনেও হতে পারে একজন নারীর আকাঙ্খার বিষয়।"

বলছিলেন আসাদ জামান, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহরের একজন ইমাম।

তিনি বলছিলেন বিবি খাদিজার কথা - যার জন্ম ষষ্ঠ শতাব্দীতে আজকের দিনের সৌদি আরবে।

তিনি ছিলেন ধনী এবং ক্ষমতাশালী, একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। সে যুগের অনেক নামী ও সম্ভ্রান্ত পুরুষ তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন - তিনি তিনি সাড়া দেননি।

শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য বিয়ে করেছিলেন, দু'বার। তার প্রথম স্বামী মারা গিয়েছিলেন, আর তার দ্বিতীয় স্বামীর সাথে তার বিচ্ছেদ হয়েছিল বলে ধারণা করা হয় ।

এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর বিয়ে করবেন না... যতদিন পর্যন্ত না সেই মানুষটির সাথে তার পরিচয় হয়েছিল - যিনি হবেন তার তৃতীয় এবং শেষ স্বামী।

মি. জামান বিবিসিকে বলছিলেন, সেই মানুষটির মধ্যে বিবি খাদিজা এমন কিছু অসামান্য গুণাবলী দেখেছিলেন - যা বিয়ে সম্পর্কে তার মনোভাব বদলে দেয়।

তাঁকে বেছে নেয়া এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়া -দুটিই করেছিলেন খাদিজা নিজেই।

উটের কাফেলা আরবের বিভিন্ন শহরের মধ্যে পণ্য আনা-নেয়া করতো

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

খাদিজার সময়ে উটের কাফেলায় আরবের বিভিন্ন শহরের মধ্যে পণ্য আনা-নেয়া হতো

সে যুগে এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল না।

খাদিজার বয়স তখন ৪০। আর তার ভবিষ্যৎ স্বামী ছিলেন ২৫ বছর বয়সের সাধারণ পরিবার থেকে আসা এক যুবক।

কিন্তু এটা কোন প্রেমের গল্প নয়, বরং তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু।

এটি হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মের সূচনার কাহিনি।

খাদিজার সেই নতুন স্বামী আর কেউ নন, তিনি পরবর্তীকালের ইসলামের নবী মুহাম্মদ।     'ব্যবসায়ী'

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন ইতিহাসের অধ্যাপক রবার্ট হোইল্যান্ড বলছেন, খাদিজা কে ছিলেন তার সম্পর্কে একটা বিস্তারিত চিত্র পাওয়া খুবই কঠিন।

তিনি বলছেন, এর একটা কারণ হলো, তার সম্পর্কে যা লেখা হয়েছে তার সবই তার মৃত্যুর বহু বছর পরে লিখিত।

"তবে বেশিরভাগ সূত্রই আভাস দিচ্ছেন যে - খাদিজা ছিলেন স্বাধীন চেতনা এবং অত্যন্ত দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন এক নারী" - বলছেন হোইল্যান্ড।

এর দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, তিনি তার সম্পর্কীয় ভাইদের বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিলেন। সে সময়কার ঐতিহ্য অনুযায়ী তার পরিবার এটাই চেয়েছিল।

ইতিহাসবিদ বেথানি হিউজ

ছবির উৎস,DAVID LEVENSON/GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

ইতিহাসবিদ বেটানি হিউজ

কিন্তু খাদিজা চেয়েছিলেন, তিনি নিজেই তার জীবনসঙ্গী বেছে নেবেন।

খাদিজা ছিলেন একজন ব্যবসায়ীর কন্যা। তার পিতা তার পারিবারিক ব্যবসাকে এক বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যে পরিণত করেছিলেন।

এক যুদ্ধে তিনি নিহত হন। তার পর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন খাদিজাই।

বিবিসির তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্রে ইতিহাসবিদ ও লেখক বেটানি হিউজ বলেন, "স্পষ্টতই তিনি তার নিজের পথ নিজে তৈরি করে নিতে অভ্যস্ত ছিলেন।"

"প্রকৃতপক্ষে তার এই যে ব্যবসায়িক দক্ষতা - এটাই তাকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল যা শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাস বদলে দেয়"।                                                                       'সহকারী'

খাদিজা তার কার্যক্রম পরিচালনা করতেন মক্কা থেকে।

তার ব্যবসার জন্য অনেক পণ্যবাহী যানের কাফেলা দরকার হতো - যা দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় শহরগুলোর মধ্যে পণ্য আনা-নেয়ার কাজ করতেন।

বেটানি হিউজ বলেন, "স্পষ্টতই তিনি তার নিজের পথ নিজে তৈরি করে নিতে অভ্যস্ত ছিলেন।

এই সব কাফেলাগুলো দক্ষিণ ইয়েমেন থেকে সিরিয়া পর্যন্ত বিশাল এক অঞ্চল জুড়ে চলাচল করতো।

খাদিজার সম্পত্তির একটা অংশ এসেছিল তার পরিবার থেকে, কিন্তু তিনি নিজেও বিপুল বিত্তের মালিক হয়েছিলেন, বলছিলেন ফোজিয়া বোরা - যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাসের অধ্যাপক।

"তিনি নিজের যোগ্যতাতেই একজন অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছিলেন।"

তিনি তার কর্মচারীদের নিয়োগ করতেন নিজেই। তার ব্যবসার জন্য কাজে লাগবে এমন বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন লোকদের খুঁজে নিতেন তিনি।

খাদিজা একজন লোকের কথা শুনেছিলেন যার অত্যন্ত সৎ এবং পরিশ্রমী বলে সুনাম ছিল। তার সাথে সাক্ষাতের পর সন্তুষ্ট হয়ে তিনি তাকে তার একটি কাফেলার দায়িত্ব দিলেন।

লোকটির ঐকান্তিকতা খাদিজার প্রশংসা পেলো এবং কিছুকাল পরে তিনি এতটাই মুগ্ধ হলেন যে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন - তিনি আবার বিয়ে করবেন।

"ইসলামের ভবিষ্যৎ নবী - যিনি ছোট বেলায় বাবা-মাকে হারানোর পর চাচার পরিবারে বড় হয়েছিলেন - তিনি সহসা এমন এক জীবনে প্রবেশ করলেন যেখানে অধিকতর স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আছে" - বলছিলেন ফোজিয়া বোরা।

খাদিজার পরিবার বাস করতেন বর্তমান সৌদি আরবের মক্কায়

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

খাদিজার পরিবার বাস করতেন বর্তমান সৌদি আরবের মক্কায়

জানা যায় যে এই দম্পতির মোট চারটি সন্তান হয়েছিল, তবে শুধু মাত্র কন্যাসন্তানরাই শৈশব পার হয়েছিল।

এই বিয়ের আরো একটি দিক ছিল যা সেই সময়ের তুলনায় অনন্য।

"এটি ছিল একটি 'মনোগ্যামাস' বিবাহ - অর্থাৎ যে বিয়েতে স্বামীর একজনই মাত্র স্ত্রী" - বলছিলেন লন্ডনের মুসলিম ইনস্টিটিউটের রানিয়া হাফাজ।

"সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখতে গেলে সেটা ছিল 'পলিগ্যামি'র সমাজ অর্থাৎ তখনকার বেশিরভাগ পুরুষেরই একাধিক স্ত্রী থাকতো। সেদিক থেকে এটা খুবই ব্যতিক্রমী। "                                     প্রথম প্রত্যাদেশ

ইসলামের নবীর জন্ম হয়েছিল কুরাইশ গোষ্ঠীতে, খাদিজারও ছিল তাই। সে সময় ওই এলাকার বিভিন্ন গোষ্ঠী নানা রকম দেবতার উপাসনা করতো।

বিয়ের কয়েক বছর পর ভবিষ্যৎ নবীর জীবনে কিছু আধ্যাত্মিক পরিবর্তন আসতে থাকে। তিনি মক্কার বাইরের পর্বতে ধ্যান করতে যেতেন।

ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি আল্লাহর প্রত্যাদেশ পান জিব্রাইলের কাছ থেকে। ইনিই সেই ফেরেশতা যিনি মেরির কাছে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি যীশুর মা হতে যাচ্ছেন।

এ ভাবেই মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কোরান অবতীর্ণ হয়।

বলা হয়, নবীর কাছে প্রথম প্রত্যাদেশ আসার পর তিনি ভয় পেয়েছিলেন - কারণ তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে কি ঘটছে।

ফোজিয়া বোরা বলছিলেন, "তার যে অভিজ্ঞতা হচ্ছিল তা তিনি বুঝতে পারছিলেন না। কারণ তিনি একেশ্বরবাদী ধর্ম সম্পর্কে পূর্বপরিচয় আছে এমন পরিবেশে বেড়ে ওঠেন নি ।"

"এসব ঘটনায় তিনি অত্যন্ত বিভ্রান্ত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেন। বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়, এসব প্রত্যাদেশ সহজ ছিল না এবং এ অভিজ্ঞতা শান্ত হলেও শারীরিকভাবে তা ছিল অপ্রত্যাশিত।"

"তিনি ঠিক করলেন, এ অভিজ্ঞতা তিনি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষটিকে বলবেন" - বলছিলেন অধ্যাপক হোইল্যান্ড।

খাদিজা ব্যাপারটা শুনলেন এবং তাকে শান্ত করলেন। তিনি তার সহজ বুদ্ধি দিয়েই বুঝেছিলেন যে যা হচ্ছে তা ভালো কিছুই হচ্ছে, এবং তিনি তার স্বামীকে আশ্বস্ত করলেন।

ইসলামের নবীর কাছে প্রথম কোরানের বাণী নিয়ে আসেন ফেরেশতা জিবরাইল

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

ইসলামের নবীর কাছে প্রথম কোরানের বাণী নিয়ে আসেন ফেরেশতা জিবরাইল

খাদিজা এমনকি তার একজন আত্মীয়ের পরামর্শ চাইলেন - যার খ্রিস্টান ধর্ম সম্পর্কে জানাশোনা ছিল। এই ওয়ারাকা ইবনে নওফাল নবীর পাওয়া প্রত্যাদেশগুলোকে নবী মুসা যা পেয়েছিলেন তার সাথে সম্পর্কিত করলেন।

বোরা বলছিলেন, "আগেকার কিতাবগুলো সম্পর্কে তার জানা ছিল, এবং সে কারণেই ইসলামের নবীর পাওয়া প্রত্যাদেশগুলোর যথার্থতার নিশ্চয়তা মিলেছিল তার কাছ থেকে।"

"আমরা জানি যে যখন কোরান অবতীর্ণ হচ্ছিল তখন নবীও নিজের ব্যাপারে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু খাদিজাই তাকে আশ্বস্ত করেন যে তিনি আসলেই একজন নবী" - বলছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ইসলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ লাইলা আহমেদ ।

বাণী প্রথম শুনলেন

বিশেষজ্ঞরা একমত যে খাদিজাই নবীর প্রাপ্ত কোরানের বাণী প্রথম শুনেছিলেন।

"তিনি এই বার্তা বিশ্বাস এবং গ্রহণ করেছিলেন" বলেন ফোজিয়া বোরা - "এটা নিশ্চয়ই নবীকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল এবং তাকে সেই বার্তা প্রচার করার কণ্ঠ দিয়েছিল।"

ফোজিয়া বোরা

ছবির উৎস,FOZIA BORA

ছবির ক্যাপশান,

ফোজিয়া বোরা

ইতিহাসবিদ বেথানি হিউজ বলছেন, এই পর্যায়ে এসে ইসলামের নবী বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের চ্যালেঞ্জ করেন এবং প্রকাশ্যে এ বার্তা প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেন যে "আল্লাহই হচ্ছেন একমাত্র উপাস্য এবং অন্য কারো উপাসনা হচ্ছে ধর্মদ্রোহিতা।"

ফোজিয়া বোরা বলছিলেন, ইসলাম প্রচার শুরুর সময় নবীকে একঘরে করে দিয়েছিলেন মক্কার সমাজের অনেকেই- যারা এক আল্লাহয় বিশ্বাসের বিরোধী ছিলেন।

ফোজিয়া বোরা বলছিলেন, "কিন্তু খাদিজা তাকে সেই সমর্থন এবং সুরক্ষা দিয়েছিলেন - যা নবীর তখন অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।"

হিউজ বলেন, "পরবর্তী ১০ বছরে খাদিজা তার স্বামীকে সমর্থন দেয়া এবং সেই নতুন ধর্ম সম্প্রদায়ের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করতে - তার সমস্ত সম্পদ এবং পারিবারিক যোগাযোগগুলোকে ব্যবহার করেছিলেন।"

হিউজ বলছিলেন, "সে সময়কার বহু-ঈশ্বরে বিশ্বাসী সমাজে এক আল্লাহ-বিশ্বাসের ওপর গড়ে ওঠা ইসলাম ছিল এক বিতর্কিত ধর্ম।"                                                                              শোকের বছর

খাদিজা তার স্বামী এবং ইসলাম ধর্মকে সহায়তা দিতে তার সাধ্যমত সব কিছুই করেছিলেন, কিন্তু ৬১৯ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান।

একসাথে ২৫ বছর কাটানোর পর ইসলামের নবী এই মৃত্যুতে একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন অনেক নারী

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন অনেক নারী

অধ্যাপক হোইল্যান্ড বলেন, খাদিজার মৃত্যুর শোক তিনি কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারেননি।

"তখনকার দিনের সূত্রগুলো যেভাবে খাদিজা সম্পর্কে কথা বলেছেন -তা সত্যি চমকপ্রদ। তাদের কথায়, নবীর সবচেয়ে বড় বন্ধু ছিলেন খাদিজা - তার ঘনিষ্ঠতম সঙ্গী আবু বকর বা ওমরের চাইতেও বেশি।"

ইতিহাসবিদ বেটানি হিউজ বলেন যে মুসলিমরা খাদিজার মৃত্যুর বছরটিকে এখনো শোকের বছর হিসেবে উল্লেখ করেন।

ইসলামের নবী অবশ্য এর পরে আরো অনেকবার বিবাহ করেছিলেন।

খাদিজাকে নিয়ে একটি বই লিখেছেন ইসলাম বিশেষজ্ঞ ফাতিমা বরকতুল্লাহ।

বিবিসির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, খাদিজা সম্পর্কে আমরা যতটুকু জানি তার বেশির ভাগেরই উৎস বিভিন্ন হাদিস - যা ইসলামের নবীর উক্তি, ও তার জীবনের নানা কাহিনির সংকলন।

নবীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা এগুলো বলেছেন এবং মনে রেখেছেন - যা পরে লিপিবদ্ধ করা হয়। হাদিসের বর্ণনাকারীদের একজন হচ্ছেন বিবি আয়শা - নবীর অন্যতম স্ত্রী এবং ইসলামের ইতিহাসে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

ফাতিমা বরকতুল্লাহ বলছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক যে নবী তাকে খাদিজার গল্প , এবং তার নবী হয়ে ওঠার সময়কার কথা বলেছিলেন। বিবি আয়শা যদিও নবীর জীবনের আগেকার পর্ব নিজ চোখে দেখেননি কিন্তু তিনি অন্য মুসলিমদের সেগুলো জানানোর মাধ্যমে তার কর্তব্য বিশ্বস্তভাবেই পালন করেছিলেন।"   এক অনন্য দৃষ্টান্ত

ফোজিয়া বোরা বলছিলেন, খাদিজার ইতিহাস জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ প্রথম দিককার মুসলিম সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে নারীদের ঘরে বন্দী করে রাখা হতো এমন যেসব ভুল ধারণা আছে - তা ভাঙার জন্য এটাই খুবই প্রয়োজনীয়।

অনেক তরুণ মুসলিম নারীর কাছে খাদিজা একজন রোল মডেল

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,

অনেক তরুণ মুসলিম নারীর কাছে খাদিজা একজন 'রোল মডেল'

"খাদিজা যা করতে চাইতেন তা থেকে বিরত থাকতে কখনো বলেননি নবী" - তিনি বলছিলেন, "প্রকৃতপক্ষে সেই সময়ের তুলনায় ইসলাম নারীদের অনেক বেশি অধিকার ও গুরুত্ব দিয়েছে।"

"একজন ইতিহাসবিদ এবং মুসলিম হিসেবে আমার কাছে খাদিজা, আয়শা এবং নবীর মেয়ে ফাতিমাসহ অন্য নারীরা অনুপ্রেরণা দেবার মত ব্যক্তিত্ব" - বলেন ফোজিয়া বোরা।

"তারা ছিলেন বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় - ধর্ম প্রচার ও ইসলামী সমাজকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তারা বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন।"

তিনি বলছেন, "আমার জন্য এটা একটা দারুণ ব্যাপার যে আমার ছাত্রছাত্রীদেরকে - তারা মুসলিম বা অমুসলিম যাই হোক - আমি এই নারীদের সম্পর্কে শিক্ষা দান করতে পারছি।"                                

নবী মুহাম্মদ স. এর ১১ জন স্ত্রী ছিল। এবং হযরত আয়শা রা. ছাড়া সবাই ছিল বিধবা। এবং নবীজীর সব বিয়ে আল্লাহর নির্দেশে হয়েছে।

4.4 হা বার দেখা হয়েছে
ভিডিওর ক্যাপশান,

নারী কোরআন তেলাওয়াতকারীরা 'ইসলামিক ধারারই অংশ'

  •  
  • কৈফিয়তনামা
  • মার্গারিটার্গারিটা রডরিগেজ
  • বিবিসি নিউজ মুন্ডো্ 
  • https://www.bbc.com/bengali/news-55983245
  • লেখিকা মার্গারিটা রডরিগেজ একজন অমুসলিম মহিলা বিধায় মার্গারিটা রডরিগেজ মহানবী এর পবিত্র নামের সাথে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং বিবি খাদিজার নামের পরে রদ্বিয়াল্লাহু আনহা উল্লেখ করেননি। সুতরাং, এই নিবন্ধটি পড়ার সময় মহানবী হযরত মুহাম্মাদ এর নামের সাথে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং বিবি খাদিজার নামের পরে রদ্বিয়াল্লাহু আনহা উল্লেখ করে মুসলমান হিসাবে আমাদেরকে নিবন্ধটি পড়তে  হবে।

·         وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّـهِ ۚ

·         Wama Taufiqui illa Billah.

·         ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহঃ অর্থ: আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই (সূরাহ হুদ, আয়াতঃ ৮৮,  [তাফসীরে মাআরেফুল কোরআন, প্রথম খন্ড, চতুর্দশ সংস্করণ-২০১১, মূল: মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ.), অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ]

·           

·         And my success (in my task) Can only come from Allah.

·         THE HOLY QUR’AN Sūra 11: Hūd (The Prophet Hūd), Ayat No. 88, Makki; Revealed at Makka — Sections 10, Translation by Abdullah Yusuf Ali About QuranYusufAli.com

·         Online rendition of the World’s most popular Abdullah Yusuf Ali Quran Translation in English published alongside the original Arabic text, completed in Lahore on the fourth of April 1937. Famously promoted by Sheikh Ahmed Deedat. South Africa.

·         Copyrighted 1946 by Khalil Al-Rawaf. Published by Islamic Propagation Centre International, Durban, South Africa.


তুরস্কের বিখ্যাত মসজিদ ভ্রমণ করে ব্রিটিশ তরুণীর ইসলাম গ্রহণ কামরুন নাহার ইভা  

তুরস্কের ব্লু মসজিদের খ্যাতি পৃথিবীব্যাপী। সুলতান আহমেদ মসজিদ নামেও তা বেশ পরিচিত। ১৬১৫ সালে নির্মিত অনিন্দ্যসুন্দর মসজিদটি পরিদর্শন করে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন এক ব্রিটিশ তরুণী। দুই বছর আগে আয়েশা রোজালি নামের ব্রিটিশ তরুণী এ মসজিদ ভ্রমণে আসেন। এরপর থেকে তিনি ইসলাম নিয়ে ব্যাপক পড়াশোনা শুরু করেন। মুসলিম হওয়ার পর নিজেকে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত করেন। আয়েশা রোজালি আমেরিকার লস এঞ্জেলেসের অধিবাসী। প্রথম জীবনে রোজালি অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন। অভিনেত্রী হিসেবে প্রশিক্ষণও নেন। দীর্ঘকালের স্বপ্ন পূরণে তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে অভিনয় শুরু করেন। অভিনয়সংশ্লিষ্ট অনেক কাজই তিনি করেন। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর রোজালি পুরোপুরি অভিনয় ছেড়ে দেন। এখন তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ইসলাম বিষয়ক পোস্ট দিচ্ছেন। রোজালি জানান, ‘আমি ইসলাম গ্রহণে আগ্রহীদের সহায়তা করতে চাই। আমি চাই আরো বেশি মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আসুক। তাই অনেক নওমুসলিমের জীবনসংশ্লিষ্ট ঘটনা নিয়ে উপস্থাপন করি।’ তুরস্ক ভ্রমণের কথা জানিয়ে বলেন, ‘তুরস্কে এসে ধর্ম সম্পর্কে জানার আমার কোনো আগ্রহ ছিল না। গুগলে খোঁজ করে ব্লু মসজিদের সন্ধান পাই। মনে মনে ভাবি যে এই মসজিদে আমার যাওয়া উচিত।’ ব্লু মসজিদের অপরূপ সৌন্দর্যে রোজালি মুগ্ধ হয়ে পড়েন। নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়ে রোজালি বলেন, ‘এত সুন্দর মসজিদের খোঁজ পেয়ে আমি হতবাক হই। আগে মুসলিমদের সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা ছিল না। কারণ পশ্চিমা মিডিয়ার মাধ্যমে আমি তাঁদের সম্পর্কে জানতাম। মূলত ইসলাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে আমার ধারণা এমনই ছিল।’ মসজিদ পরিদর্শন করার আগে রোজালি স্থানীয় দোকান থেকে হিজাব কেনেন। সবার কাছে আমি সম্মানিত থাকতে চাই। ‘আমি ভেবেছিলাম, চুল দৃশ্যমান রাখলে মানুষ আমার ওপর রাগ করবে। তাই একটি হিজাব কিনি। যেন কেউ আপত্তি জানাতে না পারে। মসজিদ ভ্রমণে এসে রোজালি ইসলাম সম্পর্কিত অনেক বিষয় সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। কিন্তু এ বিষয়ে তখন তাঁর গভীর জানাশোনা ছিল না। এমনকি অনেক কিছু সঠিকভাবে উচ্চারণও করতে পারতেন না তিনি। রোজালি জানান, ‘ব্লু মসজিদে প্রবেশ করে একটি তসবিহ ও জায়নামাজ নিই এবং কিছুক্ষণ তসবিহ পাঠ করি। প্রায় এক ঘণ্টার মতো আমি তসবিহ পড়ি। মসজিদের চারপাশ দেখে মুগ্ধ হয়ে পড়ি। মসজিদের ভেতরের সৌন্দর্য অবাক করার মতো। ভেতরের পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত ও নীরব। আমার সামনে অনেক মানুষকে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে দেখি। মসজিদের ভেতরের অবিশ্বাস্য মুগ্ধকর দৃশ্য ও নীরব পরিবেশ উপভোগ করতে থাকি। আমাকে দেখে কেউ আওয়াজ করছেন না দেখে খুবই অবাক হই।’ মসজিদ ছেড়ে হোটেলে যাওয়ার পথে রোজালি পবিত্র কোরআনের কপি খোঁজছিলেন। রোজালি মনে মনে ভাবতে থাকেন। এক কপি কোরআন সংগ্রহ করে পড়ার দৃঢ় ইচ্ছা তৈরি হয়। ইচ্ছামাফিক তিনি কোরআনের একটি ইংরেজি অনুবাদ সংগ্রহ করেন এবং হোটেলের রুমে বসে তা পড়া শুরু করেন। রোজালি বলেন, ‘কয়েক মাসে আমি কোরআনের অনুবাদ পড়ে শেষ করি। এ সময় আমি ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি। তা ছাড়া অনেক ইসলাম বিশেষজ্ঞের লেকচারও শুনতে থাকি। কয়েক মাস পর আমি কালেমা পাঠ করি। আমি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ।’ সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি kalerkantho https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2021/05/26/1036682

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

THE PEACE & PACIFIC LIFE IN ISLAM